শনিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১২

সেলাই গাছের কারখানা  সৈয়দ আফসার
প্রথম প্রকাশ
একুশে বইমেলা ২০১২
প্রকাশক কোলাজ
প্রচ্ছদ ও প্রতিকৃতি চিত্রী সত্যজিৎ রাজন
মূল্য ১০০ টাকা





একগোছা নদী ও স্মৃতিকথা

একগোছা জ্যোৎস্নাকে যদি নারী  বলা যেত
একগোছা জল যদি নারী কিংবা নদী হয়ে 
বলত : সময়ের  বুকে সকল প্রস্তুতি কী রকম
                           যেন ছড়াচ্ছে একাকীত্ব...

শোকে-দুঃখে বহু বিবরণ অইখানে  মরে গেছে
           মরেনি কেবল জ্যোৎস্না, নদী ও নারী...
একগোছা  নদী, বাজাও  জলের ভুড়ভুড়ি শব্দ
একসাথে বাজাও  দূরত্ব... গেল বছরের স্মৃতি

বছর ঘুরে এলেই তুমি একগোছা স্মৃতি ধরে
বন্ধ চোখে কেবল রাত ছুঁয়ে যাও! আমিও 
কী পুনর্বার স্পর্শ নেব মর্মাহত চোখের?

একশ্বাসে দীর্ঘশ্বাস

স্মৃতির করাঘাতে অসংখ্য মুখ দেখে
চাপাক্রোধে নিজে পুড়ি, কিছুই জানলে না
                                       পাঁজরের নিধি
শেষ অংশে পরাজিত করে বললে এভাবে
চলতে পারে না;  তারচে’ বসো একশ্বাসে
                                         দীর্ঘশ্বাস শুনি

আমাকে ব্যবহার করো চাও কি; দিবস রজনী

র্আশলিপ্সিা

‘একটি জটিল আয়ুরেখা’ চিরকাল হাত খুলে দেখায়
হারিয়ে যাওয়া; না-যাওয়া; সেও এক চিন্তানুভবফুল
যেহেতু তুমিও আত্মকাহিনিতে লেগে আছ; বাদবাকি
স্বার্থরক্ষার ভয়ে জড়িয়ে রাখছ আঁকাদৃশ্য; অস্থিসার
চুপিচুপি ফিরিয়ে দাও স্মৃতি-সম্পর্ক, চিহ্ন ও সুতায়

প্রথম-প্রথম কোন কথা বললে, দ্বিতীয় কথার ভেতর 
বদলে ফেলা যায়; শুধু কিঞ্চিৎ মিথ্যা বলার ফর্মূলা 
                             জানা দরকার
জানার ভেতর যে রহস্য; তা কোত্থেকে আসে? তাকে
কি খাবো? মনে পরাবো? না বুকে রেখে ঠোকরাবো?
কারণ, ধ্বংস হবার পূর্বে আমাদের হৃদপিণ্ডের
বিষফল কাটছে করাত; আলজিভও কাটছে দ্বিধা ও ধার
তোকে জড়িয়ে ধরার শখ যেন স্মৃতি, সেই ছোট্টবেলাকার

কুড়ি বছর পর

কিসে যেন রেগে গেলে... তার মানে
হারানো কান্নাও হতে পারে গোপনে
আরো তিন-তিনটি বছর পর...
সবই বুঝি মৃদু ত্রুটি কাঁচা মাংশের ঘ্রাণে
ওই মুখ! ‘বর্ণিত হবার লোভে’ লাজুক বাগানে
                                                   মনে ও বনে

এসব ঘটনাপ্রবাহ কুড়ি বছর পর কবিকে চেনে
শেষ দিবসে আমি যখন কিছু কথা জমিয়ে রাখি
                         কাঁধেপিঠে ধূলির নগরে
কাঁপা হাতের আড়াল থেকে সর্বস্ব দাও
                                     অতি-গোপনে

বাসমতি ঘ্রাণ

কপাল বলে কথা! যা ভোলা যায় না
কখনো স্থির অথবা অভিশপ্ত অস্থির
ভাগ্য সে-ও পথিপাশের্¡ একার
পথভোলা... অভিযুক্ত যাযাবর
যদি তিরস্কার করো, তাতেও অহংকার
ইর্ষা যথারীতি সদয়, হৃদয় পুড়াবার 
কারণ—  
তোমার অঙ্গুরীর স্পর্শ তাজ্জব ব্যাপার!
ভেজা হাতে চাল ধোঁয়ার তরতাজা ঘ্রাণ
পাচ্ছি ধোঁয়া ওঠা বাসমতি ভাতের উপর

আয়না

আয়না নিজের সৌন্দর্য যাচাই করতে শেখায়
আয়না নিজেকে জানতে, জানাতে শুদ্ধির পথ দেখায়
এ-বিশ্বাসে সংকোচহীন  আলোড়িত! বিলোড়িত কল্পনা
মর্মগ্রহণতা তোমার চোখে... চোখ রেখে যদি বলি
                                                  চোখ মনের আয়না

লুকোচুরিতে হারাতে চাই না বলে এতটা নৈকট্য   
এতটা সৌহার্দ্য ছুঁতে পারা গেল;  কিন্তু প্রতিসত্য
প্রতিদিন আয়নার মুখ দেখার কথা মনেই থাকে না
এরূপ কথা বা রচনা অন্য একটি হাওয়ায় উড়ে গেল
তুমি কারো এসেন্সটুকু ভুলে খুলে নিলে

সারাদিনের পাপগুলো যখন মনের আয়নায় খুলে খুলে দেখি
পাপে-তাপে আয়না ও নিজের ছবির কাছে দুর্বল হতে থাকি